গায়ক জুবিন গর্গ (Zubeen Garg)-এর মৃত্যু মামলায় দিনদিন বাড়ছে রহস্য। একের পর এক নতুন তথ্য ও গ্রেফতারির কারণে উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা অসমে। শুক্রবার সকালে এই মামলায় আরও দুই নতুন গ্রেফতারির খবর মিলেছে। জানা গেছে, জুবিনের দুই ব্যক্তিগত দেহরক্ষীকে আটক করেছে অসম পুলিশ।
গ্রেফতার হলেন জুবিনের দুই দেহরক্ষী
অসম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নন্দেশ্বর বোরা ও পরেশ বৈশ্য, যাঁরা ছিলেন জুবিন গর্গের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—দু’জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অর্থ লেনদেন হয়েছে। নন্দেশ্বরের অ্যাকাউন্টে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা এবং পরেশের অ্যাকাউন্টে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার লেনদেন ধরা পড়েছে। এই অর্থ তাঁদের বেতনের তুলনায় অনেক বেশি। পুলিশের অনুমান, জুবিনের মৃত্যুর কয়েকদিন আগেই এই লেনদেন হয়েছিল।
‘সিনেমা তো শুধু বিনোদন দেয় না’, ট্রোলের মুখে পড়ে উত্তরবঙ্গের পাশে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা-দেব
এখন পর্যন্ত কারা গ্রেফতার
অসম পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গায়ক জুবিন গর্গ-এর মৃত্যু মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্দীপন গর্গ ছাড়াও সিঙ্গাপুর কনসার্টের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত, গায়কের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা, ব্যান্ড সদস্য শেখরজ্যোতি গোস্বামী এবং সহ গায়ক অমৃতপ্রভা মহন্ত ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে।
ময়না তদন্তে কী জানা গেছে
সিঙ্গাপুরে হওয়া ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, জুবিনের মৃত্যু জলে ডুবে হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এখানেই উঠছে প্রশ্ন—গায়কের নাকি জলে ভয় ছিল, তাহলে কেন তিনি লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই জলে নামলেন? আরও গুরুতর অভিযোগ, উপস্থিত সঙ্গীরা নাকি তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি।
শেখরজ্যোতির বিস্ফোরক দাবি
সম্প্রতি ব্যান্ড সদস্য শেখরজ্যোতি গোস্বামী সামনে এনেছেন নতুন তথ্য। তিনি জানান, সেদিন যখন জুবিনকে ইয়টে করে মাঝ সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তাঁর ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা নিজেই ইয়ট চালাচ্ছিলেন। শেখরজ্যোতির দাবি, সিদ্ধার্থ নাকি অন্যদের মদ খেতে নিষেধ করে নিজেই মদ সরবরাহ করেছিলেন।
ম্যানেজারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
শেখরজ্যোতি আরও জানান, যখন জুবিনের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, তখন ম্যানেজার নাকি বলেছিলেন, “যেতে দাও, যেতে দাও।” এমনকি গায়কের মুখ থেকে ফেনা উঠলেও তিনি বলেন, “ওটা অ্যাসিড থেকে হচ্ছে, চিন্তার কিছু নেই।” তিনি চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থাও করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তে নতুন দিক
এই নতুন তথ্য ও আর্থিক লেনদেনের প্রমাণের পর পুলিশের তদন্ত আরও গভীরে এগোচ্ছে। দুই দেহরক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদে গায়কের মৃত্যুর রহস্যে আরও নতুন দিক উঠে আসবে বলেই মনে করছে তদন্তকারী সংস্থা।