শতাব্দী প্রাচীন রায়গঞ্জের বন্দর আদি করুণাময়ী কালীবাড়ি প্রতি বছর দীপাবলির সময় হয়ে ওঠে আলোকিত। শোনা যায়, এই পঞ্চমুণ্ডের আসন এক সাধুর হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই থেকে বামাক্ষ্যাপার বংশধররা এই কালীবাড়িতে মা কালীকে পূজিত করে আসছেন। এখানে তন্ত্রমতে পূজা হয়।
রায়গঞ্জের প্রাচীন কালীবাড়ি
রায়গঞ্জের এই সুপ্রাচীন কালীবাড়িতে পঞ্চমুণ্ডের আসনে কষ্টিপাথরের তৈরি কালী মূর্তি রয়েছে। কালীপুজোর দিনে শুধু রায়গঞ্জ নয়, ভিন রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসেন মায়ের পুজো দেখতে।
মন্দিরের ইতিহাস
মন্দিরের সঠিক প্রতিষ্ঠার তারিখ জানা নেই, তবে প্রায় ৫০০ বছর পুরনো। মায়ের মূর্তি প্রায় ২১৬ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়। কথিত আছে, পঞ্জাবের এক সাধু পায়ে হেঁটে রায়গঞ্জের কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে আসেন। একটি বটগাছের তলায় বসে সাধনা করে সিদ্ধি লাভ করেন এবং পঞ্চমুণ্ডের আসন প্রতিষ্ঠা করেন।
কালীপুজোর আয়োজন ও নিয়ম
মন্দির পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য জানান, তৎকালীন দিনাজপুরের রাজার স্বপ্নাদেশ মেনে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। তারাপীঠের মতোই নিয়মমাফিক পুজো হয় এখানে। আগে শেয়ালের ডাক শোনার পরেই পুজো শুরু হত এবং এখনও সেই রীতি চলমান রয়েছে।
ভোগ ও আয়োজন
মায়ের ভোগে দেওয়া হয় শোল এবং বোয়াল মাছ। প্রতি কালীপুজোর ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বামাক্ষ্যাপার বংশধররা পুজোর আয়োজন করেন। পুজোর দিনে মায়ের পায়ের নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়, যা ভক্তদের মন কাঁপিয়ে দেয়।
উপসংহার
রায়গঞ্জের এই ৫০০ বছরের প্রাচীন কালীবাড়ি শুধু ঐতিহ্যই নয়, ভক্তদের জন্য এক অমূল্য আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা। বামাক্ষ্যাপার বংশধরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবারের কালীপুজো, মায়ের নূপুরের ধ্বনি এবং ঐতিহ্যবাহী ভোগের মাধ্যমে ভক্তদের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে।